আমার বাচ্চার যেদিন জন্ম হলো, আমার মনে আছে, আমি আম্মুকে প্রশ্ন করেছিলাম, “ছেলে বাচ্চা কিভাবে বড়ো করতে হয়?”
আম্মু খুব অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলেছিলো, “সব বাচ্চা তো একভাবেই বড়ো করতে হয়, ছেলে আর মেয়ে কি জিনিষ?“
আমার মা হয়তো বুঝেনি আমি আসলে ঠিক কি বোঝাতে চেয়েছি। তাকে দোষ দিয়েতো লাভ নাই, আমি নিজেও বুঝিনি।
আমি বাচ্চা চাইনি, আমার জীবনের কোনো চ্যাপ্টারেই বাচ্চা ছিলো না। সেখানে আমার সৃষ্টিকর্তা আমাকে অসম্ভব ভালবেসে যখন মা হবার সুযোগ দিয়েছিলেন তখন আলাদাভাবে আমি ছেলে বাচ্চা চাইনি। এর পেছনে মূলত দুইটা কারন-
-আমার ধারনা ছিলো, আমি ছেলে বাচ্চার সাথে বন্ডিং করতে পারবোনা
-বড়ো হলে আমি ওর সাথে কিভাবে সময় কাটাবো! আমাদের মধ্যে কোন Common Interest কি আদৌ থাকবে!
মেয়েরা একসময় মায়েদের বন্ধু হয়ে যায়, এই যেমন আমার মায়ের সাথে আমি হয়েছি। বাসায় গেলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প করা হয় অথচ, আমার ভাই দিনে হয়তো আম্মুর সাথে গল্পও আলাদা করে করেনা (আমার ভাই অসম্ভব চাপা স্বভাবের) । আমার ভয়ও সেটাই ছিলো। ভয়টা কতোটা Irrational ছিলো সেটা জানিনা কিন্তু একটা ছেলে বাচ্চা বড়ো করার যেই দায়িত্বের ওজন সেটা আমি কেন যেন নিতে চাইনি। ওজনটা আমার জন্য অনেক ভারী ছিলো।
আমার এখনও খুব ভারী লাগে, ভয় লাগে। এখন অবশ্য ভয়টা অন্যরকম। এখন আমার সবসময় মনে হয়, আমি তো শুধু আমার একটা ছেলে বড়ো করছিনা, আমি একজনের জীবনসঙ্গী বড়ো করছি, একটা সংসারের প্রধানকে বড়ো করছি।
প্রতিদিনের ভয়, কোন একটা মেয়ে ওর সাথে মানসিকভাবে সেফ থাকবেতো? কিংবা শারীরিক ভাবে? সে নিজে একটা পরিবারের কর্তা হয়ে সেটাকে ঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবেতো? যেমনটা হলে আমার কাছে মৃত্যুর পরে জবাব থাকবে।
বাচ্চাদের জন্য বাইরের দুনিয়ায় বড়ো মানুষ গুলো কেমন, তাদের কেমন ব্যবহার করা উচিৎ, সেই জগতের জানালা কিন্তু আমরা মা বাবারাই। আমাদের প্রতিটি কথা, প্রতিটি কাজ ওদের শেখাচ্ছে, নিজের অজান্তেই।
আমার এখনো প্রতিদিন মনে হয়- আমি নিজে ভালো তো? আমার থেকে সে ভালো শিক্ষা পাচ্ছে তো?
এগুলো আমাকে ভয়ংকর খুবই তাড়া করে বেড়ায়।
২০২৪ সালটা আমার জন্য অনেক আলাদা, আনুষ্ঠানিকভাবে আমি একাই হামজার সব। মা এবং অভিভাবক হিসাবে এই বছরের আমার চেষ্টা কিংবা টার্গেট ছিলো দুইটা
– কিভাবে নিজের আরেকটু ভালো হওয়া যায়,
এবং
-কিভাবে হামজাকে ভালো রাখা যায়।
এই দুইটা উদ্ধেশ্যর খাতিরে, আমি আমার এই ছোট্ট শখের ব্লগকে আরেক্তু বড়ো পরিসরে নিচ্ছি। পরিকল্পনার মধ্যে বেশ কিছু নতুন বিষয়ও থাকছে যা আস্তে আস্তে চলে আসবে। আমি বলে বুঝাতে পারবোনা আমি কতোটা Excited!
শখের বশে শুরু করা ব্লগ থেকে যে এতো মানুষের ভালোবাসা পাবো তেমনটা কখনোই ভাবিনি, আমি কৃতজ্ঞ